Sunday 24 November 2013

স্মৃতিচারণ



কাক ডাকা ভোরে,
খুঁজেছি তোমারে।
হাত মাখা এক মুঠি আলো।


পিছনে ফিরিয়া, কি জানি ভাবিয়া,
দেখি,
মুখ ভরা এক চিমটি হাসি।

                    
                     গোধূলিরও পরে,
                     মৃদু সমীরণে, উড়িতেছে এলোকেশ রাশি।
                     

ঘুমে ভরা আঁখি, কি জানি কি দেখি,
স্বপনে, এসেছিলে তুমি।
                     আধো ঘুমে জাগি, পাশে নাহি দেখি,
                            চোখ ভরা এক ফোটা জল!
*********************************************
আমার কৈশরের বেশ কিছু মুহূর্তের সাথে মিশে থাকা প্রিয় বন্ধুটিকে খুব মিস করছি। তাকে মনে করেই “স্মৃতিচারণ”।

এই আমি...



আজ সৃষ্টিগুলি থমকে গেছে, অবাক তাকিয়ে-
আমি সত্যিটাকে ভ্রান্তিভেবে দিচ্ছি উড়িয়ে।
হাওয়ায় উড়ে আসছে ফিরে স্বপ্ন ভাঙ্গার গান,
মিথ্যেটাকে সত্যি ভেবে বাড়ছে অভিমান।

আজ,
না-চাওয়াটাই হচ্ছে পূরণ,
চলছে সবাই যে যার মতন!
আমিই আছি ছিলাম যেমন, সেথায় দাঁড়িয়ে।
সত্যি বুঝি সবকিছু মোর যাচ্ছে হারিয়ে।
 

*********************************************
সবকিছুই নিজের মতকরে চলছে, কিন্তু নিজেকে সবার সাথে তাল মিলিয়ে নিতে পারছি না। অপ্রিয় মূহুর্ত গুলো যখন বর্তমান ছিলো তখন সেগুলোকে মিথ্যে স্বপ্ন ভেবে নিজেকে বুঝিয়েছি ধুর, ভয়ের কিছু নেই একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে...কিন্তু পরে ঠিকই বুঝেছি সত্যিই সেটা আর নেই।

Friday 6 September 2013

অসমাপ্ত কবিতা(কবিতা)


এই ছোট্ট জীবনে কোন কিছুই শেষ করতে পারিনি - চাইবার মত করে,
শুরুতে যাহা ছিলো আপন, ঘোর ভাঙ্গিলে দেখি তাহা নয় মোর,
মিছেমিছি আমিই বেধে রেখেছি আমারে ।
তবে কি মিথ্যে বাঁধনের লাগি, দিয়াছি সবি আমি উজার করে?
সত্যি কি আজ আর আমার বলে কিছু নেই  আমাতে ?

মনে হচ্ছে অসীম শুন্যতায় আমি, একলা...
কিছু স্মৃতি আর একখানি মুখ ছাড়া আমার আর সম্বল বলে কিছু নেই
বন্ধু, তুমি কি জানো সেই মুখখানি কার ?
কার সেই স্মৃতি, যা আমায় কখনো কখনো এই অসীম শূন্যতার মাঝেও একটু সুখ এনে দেয়?
জানো বই কি,
সে যে তুমি তা কি পুনোরায় বলে দিতে হবে?
জানি, তার আর দরকার নেই...

কোন একদিন স্মৃতিটুকুও হয়তো মুছে যাবে,
পড়ে রবে কাগজের স্তুপে – কাব্যে, ছেড়া পাতায়...
মুছে যাব আমি নিজেও...
সেদিন হয়তো দূর হতে দেখব,
আসলে আমার জীবনটিই লিখা ছিলো অসমাপ্ত কবিতায় ।

Friday 11 January 2013

"শুন্য নীলিমা" (কবিতা)

বাদলা দিন। অপরাহ্ণে,
এক পশলা বৃষ্টির সমাপ্তিতে।
মনের অগভীরের আলোর ছটা রঙ হয়ে
ফুটেছিল পূর্ব দিগন্তে।
          রামধনু!
সাত সাতটি রঙ যেন সাতটি অচেনা রূপ।
জানা হয়নি এ-জনমে।
কি অপূর্ব সমাবেশে, একাকার মিশে,
রহিয়াছে পড়ে নিস্তব্ধ আকাশের বুকে।
এযেন প্রিয়ার চুলে যুক্ত কেশকাটা।
অসীমত্বে সসীম প্রতিমা।
যত চাহি, কি যেন এক মায়াবী-
সুর, কাছে টানে মম।
এক অদৃশ্য বাঁধন!
যারে দেখিনি কখনো।
তবু কি যেন-
      এক নেশা জাগে ক্ষীণ।
তাহাতে,
      ভয় কিবা আশা রহিয়াছে লেপ্টানো।
তবুতো জপেছি, তুমি মম তুমি মম।
                  কেনো?
গোধূলি ক্ষণ,
চারিদিকে একি শুনি হাহাকার ধ্বণি!
সাত রঙ ধীরে,
                লুকায়িতেছে নিজেরে।
বাঁধন কি গিয়াছে উবে?
                অন্তরালে......
অস্পর্শী এক কাতরতায়-
                শুন্য নীলিমায়?
 ****************************************************************************************************************
উৎসর্গঃ শুভ্র ব্যক্তিতের অধিকারিণী আমার প্রিয় বন্ধুকে। যার মত শুভ্র ব্যক্তিত্ব আমি আগে দেখিনি।

"বাসন্তী কোকিল" (কবিতা)

এ মধু লগনে,           বসন্তের-ও ক্ষণে,
   এসেছ কোকিল মম হৃদয় কাননে।
কাড়িয়াছ ব্যাথা,         সেকি মধুরতা-
   জানায়েছ তুমি হবে মোর সখা।
একি ব্যাকুলতা?
নাকি,
   মরিচীকা!

ক্ষণে ক্ষণে.........
   গোপনে, আলাপনে।
   ছড়ায়েছ বিষমৃত মম হৃদয় গগনে।
   ভূলেছিযে আমি, বন্ধুত্বের লাগি
   দিয়াছি হৃদয়ের নিগূঢ় সুখ ঢালি।
রাখিনিতো মম লাগি,
         এতটুকু অবশেষ!

বসন্তের শেষ দিনে,
           জানিনু আলাপনে-
এসেছিলে কোকিল,
           মধু লভিতে এ কাননে।
শুন্য হৃদয়ে, মিনতি সিক্ত নয়নে
           চাহিয়াছি.....
ঐ যে, ঐ দূরে ছুটিছো তুমি।
            নতুনের আহবানে।
এসেছিলে কোকিল তুমি,
            বসন্তের ক্ষণে।
 ****************************************************************************************************************
কতক বন্ধুর দেখা পেয়েছি, যারা শুধু বসন্তেই আসে! আবার বসন্ত শেষে নিজে থেকেই চলে যায়। এই কবিতা তাদেরকে উৎসর্গ করলাম।

Thursday 10 January 2013

"কিছুক্ষণ"


“দিদি দ্যাখ কি সুন্দর জ্যোসনা !”
“ ঐ দিকে যাবি দিদি ?” – দিদির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো কিংশুক ।
“ নারে , ঐ দিকে ভূত আছে… !”
“ভূত !!!” বলেই হাসা শুরু করে দিলো কিংশুক ,যেন খুব মজার কথা শুনেছে সে ।
“ চল না দিদি…যাই, পুকুর পাড়ে অনেকদিন থেকে বসি না তোর সাথে । ”
খুব বেশি রাত হয়নি এখনো । বড়জোর ৯ টা সাড়ে ৯ টা বাজে । কিন্তু গ্রামে এতেই মনে হচ্ছে যেন গভীর রাত হয়ে গেছে ।
“ দিদি দেখেছিস চাঁদটা কি সুন্দর ! ” একথা বলেই অপলক নয়নে সে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে।
কিংশুক এখন অনার্সে পড়ে , কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং । পূজোর ছুটিতে বাড়িতে এসেছে । বাড়িতে আসলেই সে চলে আসে তার দিদির কাছে । দিদি তাকে বড় আদর করে । সেও কম ভালবাসেনা তার দিদিকে । পৃথিবীতে এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা শুধু ভালবাসা খুজে বেড়ায় । কেউ যদি এদেরকে একটু মমতা দেখায় তাহলে এরা তাদেরকে দেবতা তূল্য মনে করতে শুরু করে । কিংশুকের কাছে তার দিদি তার কাছে দেবী তূল্য ।
নীরবতা ভঙ্গ করে দিয়ে দিদি বলল, “ঠান্ডাটা হঠাৎ করেই পরে গেল নারে ভাই ?”
“হুম…ম…ম……” আকাশ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে কিংশুক তাকাল দিদির দিকে , “চাদর গায়ে দিসনি কেন ? নে আমারটা নে ।”
“ না না লাগবেনা । ধুর তুই গায়ে দে ।” চাদরটা হাতে নিয়ে দিদিও চাঁদ দেখতে লাগল ।
“ ভাই………”
“ হুম……ম…ম…”
“ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছিস কেন এভাবে ? ”
“ চাঁদ দেখছি । ”
কিংশুক বুঝতে পারল দিদি তাকে কিছু বলবার প্রস্তুতি নিচ্ছে । তবুও সে এমন ভাব করে চাঁদ দেখছে যে সে কিছুই বুঝেতে পারেনি ।
“ দিদি তোরা মেয়েরা চাইলেও অনেক কিছু করতে পারিস না, তোদেরকে নিয়ে অনেক প্রোবলেম।”
পুকুরের পানিতে কিসের যেন শব্দ হল বেশ কয়েকবার ।
“ অনেক মাছ তোদের পুকুরে, না দিদি ? ”
“ হ্যাঁ রে ভাই, আছে মোটামুটি । ”
“ তুই ছেলে হলে আজ সারারাত তোর সাথে পুকুরপাড়ে বসে চাঁদ দেখতাম ।”
“ আচ্ছা ভাই , একটা ছেলে মাস্টার্সে পড়ছে অথচ এখন প্রেমে পরেনি এটা কি তোর বিশ্বাস হয়?”
“ এ যুগের ছেলেপেলেদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বিশ্বাস করার মত না, কেন বলতো? ”
“ না , এক দাদা আছেন তিনি………”
“ কেন তোর কি তাকে ভাল লেগেছে ? ”
“ না না আমার না,ঐ দাদাটাই আগ্রহ দেখাচ্ছে । তাকে কি আমি বিশ্বাস করব ? ”
“ না দিদি ছেলেদের এত সহজে বিশ্বাস করার কিছু নেই । মেয়েরা যদিও সহজেই তাদের দেয়া কথা ভুলে যায় কিংবা মনে করে ভুলে যাওয়া ছাড়া তো কোন উপায় ছিল না তবুও তাদেরকে চেনা যায় সহজেই কিন্তু একটা ছেলেকে এত সহজে চিনতে পারবি না । ছেলেদের চিনতে একটু সময় নেয়া উচিত । তাই বলে আমি দাদাকে অবিশ্বাসও করতে বলছি না । তুই বারবার পেছনে তাকাচ্ছিস কেন ? ”
“ কই তাকাচ্ছি নাতো……” বলেই দিদি আবার তাকাল পিছনে ।
“ এবার সহ মোট কতবার হল জানিস? সাতবার………”
কিংশুকের এই অভ্যাসটি খুব বেশি , সে যদিও গুনেনি তারপরেও সে বলল সাতবারের কথা । মানুষকে চমকে দিয়ে সে এক ধরনের আনন্দ পায় । বিস্মিত মুখে এক ধরনের সারল্য এসে ভর করে । সারল্য ভরা মুখ দেখতে তার ভালই লাগে। কেমন যেন শিশু শিশু ভাব চলে আসে এই সময়ে।কিংশুক তাকিয়ে আছে তার দিদির মুখের দিকে , দিদির মুখ হাসি হাসি । মিষ্টি চাঁদের আলো পরেছে দিদির মুখে । চাঁদের আলোতে দিদির হাসিমাখা মুখখানি দেখতে তার বড় ভাল লাগছে ।
“ আচ্ছা ভাই তুই কবে চলে যাবি ভার্সিটি ? ”
কিংশুকের বলতে ইচ্ছে করছে তোকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না দিদি । যদি তোর সাথে থেকে যেতে পারতাম ।
“ মা , তোকে ডাকছে তোর দিদি । আয় বাড়িতে আয় তারাতারি ।”- মামা ( দিদির বাবা ) যে কখন পেছনে এসে দাড়িয়েছেন টেরই পায়নি ওরা ।
“ ভাই যাবি না ? চল । ”
কিংশুক আর শেষ করতে পারল না তার কথাগুলি । আসলে আজ পর্যন্ত সে তার কোন কথারই শেষটুকু কাউকে বলতে পারে নি , এমনকি তার ভালবাসার প্রিয় মানুষ্টিকেও না। কেন জানি সবকিছুরিই শেষটুকু শুরু করবার আগেই সব শেষ হয়ে যায় তার জীবনে ।
“ কিরে চুপ হয়ে গেলি কেন ? যাবি না ? ”
“ হুম…ম……ম… যাব । আমি একটু এখানে বসে থাকি দিদি , কিছুক্ষণ পর আমি এদিক দিয়েই বাড়িতে চলে যাচ্ছি ,তুই যা ।”
“ না , তা কিভাবে হয় বল ? তুই এখুনি চল । আমি বাড়ি যাচ্ছি আর তুই এইদিক দিয়ে চলে যা।”
গ্রামের পথ ধরে কিংশুক হেটে ফিরছে ।ধীরে ধীরে কুয়াশার মাত্রা তীব্র হচ্ছে ।হঠাত সে বুঝল তার ঠান্ডা লাগছে। চাদরটা আসার সময় দিদির কাছ থেকে আর ফেরত নেয়া হয়নি। একটি বারের জন্য সে পিছন ফিরে তাকাল,ভাবল চাদরটা কি সে আনতে যাবে? আবার ভাবল থাক, দরকার নেই আর ফেরত যাবার। চাঁদটার দিকে চোখ পরতেই তার মনে হল চাঁদটাও যেন মুখ টিপে হাসছে তার দিকে তাকিয়ে । কি মনে করে সেও মুচকি হাসি দিয়ে আবার হাটা শুরু করল, তাকে তারাতারি ফিরতে হবে নইলে অসুখ হতে আর রক্ষে নেই।
 ****************************************************************************************************************
আমি কখনো ভাবিনি আমি গল্প লিখব। হঠাত করে এলোমেলো সব চিন্তা ভাবনা গুলো টাইপ করে ফেললাম, জানিনা কতটুকু কি লিখতে পেরেছি। আদৌ এটা কি ছোট গল্প হয়েছে? আমি জানিনা....! এই ব্যাপারটি বিচারের দায়িত্ব আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম। ভালো থাকবেন সবাই।